ভারতের মুম্বাইয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বাবা সিদ্দিককে। রাজনীতিক হিসেবে তাঁর বেশ নামডাক ছিল। মহারাষ্ট্র রাজ্যের বিধায়ক ও সাবেক মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। গতকাল শনিবার রাতে এই হত্যাকাণ্ডের পর সন্দেহের তির যাচ্ছে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের দিকে। কারাগারে থাকা এই ব্যক্তি একটি কুখ্যাত গ্যাংয়ের মূল হোতা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই গ্যাং হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
বাবা সিদ্দিক হত্যার পর দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে মুম্বাই পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা নিজেদের লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছেন। পুলিশও বলছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন এই গ্যাংয়ের সদস্যরা। ধারণা করা হয়, বিষ্ণোই গ্যাংয়ে অস্ত্র চালাতে দক্ষ এমন ৭০০ সদস্য রয়েছেন। তাই গতকালের ঘটনার পর গ্যাংটি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
লরেন্স বিষ্ণোইয়ের বয়স বেশি নয়। ১৯৯৩ সালে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে জন্ম তাঁর। ২০১০ সাল পর্যন্ত তাঁর জীবন কেটেছে রাজ্যের আবোহার শহরে। এরপর তিনি ডিএভি কলেজে ভর্তি হতে চণ্ডিগড়ে পাড়ি জমান। ২০১১ সালে যোগ দেন পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস স্টুডেন্টস কাউন্সিলে। সেখানে তাঁর পরিচয় হয় ‘গ্যাংস্টার’ গোল্ডি ব্রারের সঙ্গে। এরপর ধীরে ধীরে অপরাধে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
বিষ্ণোইয়ের বিরুদ্ধে দুই ডজনের বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। রয়েছে হত্যা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। যদিও এসব অভিযোগের কোনোটাই স্বীকার করেননি তিনি। আগেই বলা হয়েছে, ভারতজুড়ে তাঁর গ্যাংয়ে ৭০০ বন্দুকধারী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। নিজের গ্যাংয়ের এই সদস্যদের মাধ্যমে কারাগারে বসেও বাইরের অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি।
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে চণ্ডিগড়ে অপরাধ কর্মকাণ্ড শুরু করেন বিষ্ণোই। ২০১৩ সাল নাগাদ তিনি ত্রাস সৃষ্টিকারী এক চরিত্রে পরিণত হন। কয়েকটি হত্যার ঘটনার সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে পড়ে। পরে তাঁর গ্যাং মদ বেচকেনা ও অস্ত্র চোরাচালানে অর্থ লগ্নি করা শুরু করেন। হত্যাকারীসহ ভয়ংকর সব অপরাধীদেরও আশ্রয় ও সুরক্ষা দিয়ে আসছেন তাঁরা।